ডিজিটাল নিরাপত্তা গাইড
ডিজিটাল স্পেসে সাংবাদিকদের জন্য হুমকি ক্রমেই বাড়ছে। একারণে অনলাইনে যোগাযোগ এবং তথ্য রক্ষায় তাদের বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া দরকার।
কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিপদের গভীরতা জেনেও সাংবাদিকরা কোনো ধরনের মৌলিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না।
ছোট একটি পদক্ষেপ আনতে পারে বিরাট পরিবর্তন” শ্লোগানে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা গাইড প্রকাশ করেছে ররি পেক ফাউন্ডেশন। এই নির্দেশিকা তৈরির সময় বিষয়-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করেছে জিআইজেএন।
পিডিএন পালসের একটি সাক্ষাৎকারে ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ট্রিভোর টিম বলেন, “কেউ কখনো বলতে পারবেন না, তিনি শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু কিছু মৌলিক পদ্ধতি অনুসরণ করে. যে কেউ ইন্টারনেটের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ব্যবহারকারীর তুলনায় নিজেকে আরো নিরাপদে রাখতে পারেন। এই নিরাপত্তা অনেক দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে ।”
ই–মেইল
• যেসব দেশে সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি হয়, সেখানে গেলে স্থানীয় ইমেইল সেবার উপর নির্ভর করবেন না।
• নিজ বাড়িতে নিরাপদ ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার করুন। যেমন, ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে “https” লেখা দেখলে ধরে নিতে পারেন ইমেইল সার্ভিসটি সুরক্ষিত। জিমেইল গতানুগতিক ভাবেই নিরাপদ।
• যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তারাই আপনার একাউন্ট নিরাপদে রাখবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। আপনার অফিসের প্রযুক্তি ডেস্কের সাথে কথা বলুন। প্রয়োজনে গুগল বা ইয়াহুতে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট খুলুন, যাতে ইমেইলের নিরাপত্তার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকে।
পাসওয়ার্ড এবং টু-ফ্যাক্টর লগইন
আপনার যদি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকে তবে সবাই আপনার ইউজারনেইম জানে। তার মানে, হ্যাকাদের শুধু আপনার পাসওয়ার্ড দরকার। তাই আত্মরক্ষার প্রথম ধাপ হল একটি তুলনামূলক জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।
লগইন সেটিংস
কম্পিউটারে অন্তত একটি ডিফল্ট অ্যাডমিন অ্যাকাউন্টসহ একাধিক ইউজার অ্যাকাউন্ট রাখুন। নিশ্চিত থাকুন যে দ্বিতীয় অ্যাকাউন্টে কোনো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সুবিধা নেই। তারপর আপনার দৈনন্দিন কাজের জন্য ঐ লগইনটি ব্যবহার করুন। এরপর ম্যালওয়ার স্বয়ংক্রিয় ভাবে ইন্সটল হওয়ার চেষ্টা করলে, বার্তার মাধ্যমে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাসওয়ার্ড চেয়ে আপনাকে সতর্ক করবে কম্পিউটার।
ম্যালওয়্যার
• সন্দেহজনক অ্যাটাচমেন্ট থেকে সাবধান থাকুন, সফটওয়্যার আপডেট রাখুন এবং ভাল এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ইন্সটল করুন।
• আপনার চেনা কোনো ব্যক্তি বা দল থেকে মেইল এসেছে, কিন্তু ইমেইল অ্যাড্রেসের বানানে সামান্য হেরফের আছে – এমন কিছু দেখলেই সতর্ক হোন।
• ম্যাক খুবই সুরক্ষিত এমন ভুলধারণা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
• নিরাপত্তা ব্যবস্থাহীন পুরোনো কম্পিউটার আপনাকে আরো বড় বিপদে ফেলতে পারে।
টিউটোরিয়াল ও টিপ শিট
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে গাইডের কোনো অভাব নেই। এদের বেশিরভাগই খুব জটিল। এদের সবই যে সাংবাদিকদের জন্য উপযোগী, তা-ও নয়। তবে সেখানে কিছু না কিছু পাবেন।
ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফউন্ডেশন নজরদারি থেকে আত্মরক্ষার একটি গাইড তৈরি করেছে। সেখানে নিরাপত্তার সাতটি প্রাথমিক ধাপসহ বেশকিছু পরামর্শ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে রয়েছে:
• পাসওয়ার্ডের সঠিক ব্যবহার: শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির জন্য ডাইসওয়্যার ব্যবহার করুন। একই পাসওয়ার্ড বারবার ব্যবহার করবেন না, এনক্রিপ্টেড ডেটাবেসে নিরাপদভাবে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের জন্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহারের কথা বিবেচনা করুন।
• তথ্য-প্রমাণ ধ্বংস করা উচিত নয়। আপনি কোন তথ্য রাখবেন আর কোনটি মুছে ফেলবেন তার একটি নীতিমালা তৈরি করুন।
• তথ্য সুরক্ষার প্রথমিক কথা: আপনার অ্যাকাউন্ট এবং স্ক্রিনসেভারের জন্য লগইন প্রয়োজন। আপনার পাসওয়ার্ডটি শক্তিশালী করুন। নিশ্চিত করুন আপনার সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিরাপদ।
• তথ্য এনক্রিপশন: পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত তথ্য পাওয়া সরকারী সংস্থাগুলোর জন্য খুব একটা কঠিন নয়। তবে ভাল করে এনক্রিপ্ট করা তথ্য পাওয়া অনেক কঠিন। কোন কাজের জন্য কিভাবে এনক্রিপশন করবেন, সে বিষয়ে মৌলিক পরামর্শের একটি নির্দেশিকা রয়েছে এসএসডির।
• ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা: অ্যান্টি-ভাইরাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করুন, সেগুলো আপডেট রাখুন এবং সন্দেহজনক লিঙ্ক এবং ফাইল এড়িয়ে চলুন।